সর্বশেষঃ

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সতর্ক করে দিলেন আদালত

এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করায় দিনাজপুর জেলার এডিএম আসিফ মাহমুদকে সতর্ক করে দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মেহেদী হাসান মন্ডলের আদালত।

আদালত সূত্রে জানা যায় যে, জনৈক পালান চন্দ্র সরকার গত ইং ০৫.০৮.২০ তারিখে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিআরপিসি’র ১৪৪ ধারায় একটি মামলা আনয়ন করেন। নালিশী সম্পত্তিতে প্রার্থীর দখল না থাকায় আদালত প্রার্থীর আবেদন নামঞ্জুর করে মামলাটি নথিজাত করেন।

প্রার্থী উক্ত আদেশ এর অসম্মতিতে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আনয়ন করলে রিভিশন আদালত নথি পর্যালোচনায় দেখতে পান যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে বেআইনী ও ক্ষমতাবহির্ভূতভাবে প্রার্থীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। আইনত মামলার এই পর্যায়ে জবানবন্দি রেকর্ড করার সুযোগ নেই। তাছাড়া কোনো মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করার এখতিয়ার শুধুমাত্র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের থাকায় এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বেআইনীভাবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা চর্চা করায় অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত রিভিশন আদালত হিসেবে তাকে সতর্ক করেছেন।

ভবিষ্যতে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা চর্চা না করার জন্য সাবধান করে রিভিশন আদালত আরও বলেন যে, Cr.P.C’র scheme অনুযায়ী প্রার্থীর জবানবন্দি নেয়ার এখতিয়ার শুধুমাত্র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-এর আছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেই; Cr.P.C ২০০ ধারা মতে শুধুমাত্র একজন ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগকারীর জবানবন্দি রেকর্ড করতে পারেন; উক্ত ধারায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলা না থাকলেও Cr.R.C’র ৪এ(১)(এ) ধারা মতে আইনে শুধুমাত্র ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ লেখা থাকলে এবং ‘জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট’ বা ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’ লেখা না থাকলে ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ বলতে ‘জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট’ বোঝায়। সেই অর্থে Cr.P.C ২০০ ধারার জবানবন্দি শুধুমাত্র একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহন করতে পারেন, কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নয়।

মূল মামলাটিতে প্রার্থীর জবানবন্দি গ্রহণের মাধ্যমে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা ব্যবহার করে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে আদালত পর্যবেক্ষণ দেন।