সর্বশেষঃ

অর্থ সংকটে করোনা নিয়েই হাসপাতাল ছাড়লেন নারায়ণগঞ্জের সেই কাউন্সিলর

আর্থিক সংকটের কারণে ‘করোনা পজেটিভ’ নিয়েও গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল ছেড়েছেন নারায়ণগঞ্জের সেই আলোচিত কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। আজ শনিবার হাসপাতাল ছাড়বেন তাঁর স্ত্রীও। নারায়ণগঞ্জের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজ এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানান।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৩০ মে কাউন্সিলর এবং তাঁর স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনার নারায়ণগঞ্জের সাজেদা হাসপাতালে ভর্তি হন। এর পরের দিন স্ত্রীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে দুজনকেই রাজধানীর পান্থপথের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে তাঁরা দুজনই ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

করোনার উপসর্গে বা করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে যখন পরিবারের লোকজন দাফন করতে এগিয়ে আসেনি, ঠিক সে সময় মৃতদেহ দাফন করেন কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করেছেন তিনি।

খন্দকার খোরশেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত ৩১ মে আমি এবং আমার স্ত্রী স্কয়ার হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হই। আমি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। আমার স্ত্রীর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ওখানে ভর্তি না হলে কী হতো তা আমি জানি না। হাসপাতাল আমাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা দিয়েছে।’

মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি আর পেরে উঠছি না। ভর্তির পর থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের দুজনের চিকিৎসায় বিল এসেছে ছয় লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এই টাকার বাইরে খরচ করার ক্ষমতা আমার নেই। তাই হাসপাতাল থেকে চলে এসেছি। কিন্তু আমার আরো কয়েকদিন থাকা উচিত ছিল। অন্তত প্রথম দফায় নেগেটিভ আসা পর্যন্ত।’

কাউন্সিলর বলছিলেন, ‘গতকাল আমার এবং আমার স্ত্রীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার ফলাফলে আমার করোনা পজেটিভ এলেও আমার স্ত্রীর নেগেটিভ আসে। কিন্তু আমার শরীরের অবস্থা খুব ভালো বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন। সেজন্য আমি চিকিৎসকদের অনুরোধ করেছিলাম যাতে আমাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার আমি চলে এসেছি। আজ আমার স্ত্রীও ছাড়পত্র পাবে। আমি বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। আজ আমার স্ত্রীও চলে আসবে।’

নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ৬০ জনের দাফন সম্পন্ন করার পর দেশজুড়ে প্রশংসিত কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। এমনকি করোনায় মৃত হিন্দু ব্যক্তিদেরও সৎকার করেন তিনি ও তাঁর টিম। এ কারণে ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’, ‘করোনা যোদ্ধা’, ‘সুপার হিরো’সহ নানা খ্যাতি পেয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *