সর্বশেষঃ

এমপিকন্যা বলে কথা!

২০০৯ সালে ইসলামপুরে ঐতিহ্যবাহী জগৎ জ্যেতি ক্ষেত্র মোহন (জে জে কে এম) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। নিয়োগের এক মাস পর অসুস্থতার কথা জানিয়ে ছুটি নেন তিনি।

কিন্তু এরপর ১১ বছর কেটে গেলেও ছুটি আর শেষ হয়নি তার, এখনো কর্মস্থলে ফেরেননি তিনি।

এতো কর্মস্থলে না এলেও তার চাকরি ঠিকই বহাল রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তার বাবা জামালপুর-২ আসনের এমপি ফরিদুল হক খান দুলালের প্রভাবে বছরের পর বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও চাকরিতে বহাল তবিয়তে আছেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, এমপি ফরিদুল হক খান দুলালের ফারজানা হক যোগদানের পর কয়েকদিন ক্লাস নেন। পরে ওই বছরই তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এক মাসের ছুটি নিয়ে স্বামী-সন্তান নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান।

এদিকে এমপি কন্যার এ ধরনের কর্মকাণ্ডে স্থানীয়দের মাঝে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বেশিরভাগ মানুষই এমপি কন্যার এমন কর্মকাণ্ডে ধিক্কার জানিয়েছেন। এ বিদ্যালয়ে চাকরি করেন ফারজানা হক, ছবি: বাংলানিউজজেজেকেএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুর রহমান বলেন, ফারজানা হক বিদ্যালয়ে না এলেও বেতন উত্তোলন করেন না। তবে তার পদ থেকেও অব্যাহতি নেননি। শুনেছি, তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে কিছুদিনের মধ্যে এসে এর একটা ব্যবস্থা করবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস জানান, আমি গত মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছি। চলতি মাসেই এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। রেকর্ড অনুযায়ী ২০০৯ সালের এপ্রিলে অসুস্থতাজনিত কারণে এক মাসের ছুটি নেন ফারজানা হক। এরপর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তবে তিনি এরপর থেকে বেতনও তোলেননি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে জামালপুর-২ আসনের টানা তিনবারের এমপি ফরিদুল হক খান দুলাল বলেন, আমার মেয়ে স্বামী নিয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। সেখানে একটা ব্যবস্থা হলেই এর একটা সুরাহা হবে। আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে এ বিষয়টি সমাধান হবে।

উল্লেখ্য, এক সময় জাতীয় পার্টি করতেন ফরিদুল হক খান দুলাল। ওই দলের শাসনামলে ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যানও। তবে এখন তিনি ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি হন তিনি।