সর্বশেষঃ

করোনাভাইরাস: ‘ডেল্টা’ ধরনের সামনে যে মাস্ক অকেজো

বাজারে যেসব কাপড়ের মাস্ক পাওয়া যায় সেগুলোর কোনোটাই সেভাবে সুরক্ষা দিতে পারে না।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ যখনই কিছুটা কমে আসছে মনে হচ্ছিল তখনই আঘাত হানে নতুন ধরন ‘ডেল্টা’। পরিস্থিতি এতই ভয়ানক হল যে সংক্রমণ আর মৃত্যুর হার দুটোই আগের রেকর্ড ভাঙল।

কারণ নতুন এই ধরনের সংক্রমণ ও প্রাণঘাতি ক্ষমতা পুরানো ধরনগুলোর তুলনায় কয়েকগুন বেশি। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়ল। আর এর মধ্যে সবচাইতে জরুরি মাস্ক পরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটা সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজ রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি’র পরিচালক, ‘এপিডেমিওলজিস্ট’, ডা. মাইকেল অস্টারহোম সিএনএন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “বহুল ব্যবহৃত মাস্কগুলোর মধ্যে অধিকাংশই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট কার্যকর নয়। সময় এসেছে সব ধরনের কাপড়ের মাস্ককে বাতিল করার। ব্যক্তিগতভাবে শুধু নাক মুখ ঢেকে রাখার ধারণাটির সঙ্গে আমি একমত নই।”

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “এই ধারণার মানে হল কিছু একটা দিয়ে নাক আর মুখ ঢেখে রাখলেই কাজ শেষ। প্রকৃতপক্ষে কাপড়ের মাস্ক শুধু করোনাভাইরাস নয়, কোনো জীবাণুকেই আটকাতে পারে না।”

কাপড়ে মাস্কের অকার্যকারিতা তুলে ধরতে অস্টারহোম উদাহরণ দেন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে চলতে থাকা দাবানলের।

তিনি বলেন, “প্রতি মুহূর্তেই মানুষ হয় শ্বাস নিচ্ছে অথবা ছাড়ছে। ওই দাবানল সামাল দিতে যারা কাজ করছেন তাদের প্রত্যেকেই মুখ কাপড় বেঁধে রাখছেন। তাদেরকে যদি প্রশ্ন করেন তো জানতে পারবেন তাদের প্রত্যেকেই ধোঁয়ার গন্ধ পাচ্ছেন নাক, মুখ বেঁধে রাখার পরও।”

তিনি আরও বলেন, “ভালো মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলার সময় এসেছে। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পারে এমন কার্যকর মাস্ক পরার পরামর্শ সাধারণ মানুষকে দিতে হবে, তাতেই একমাত্র এই ভাইরাসের সংক্রমণ দমানো সম্ভব সত্যিকার অর্থে।”

“যেমন ‘এন৯৫ রেস্পিরেটর’ ব্যবহার। এতে যে মানুষগুলো এখনও টিকা নিতে পারেননি কিংবা এখন পর্যন্ত একবারও আক্রান্ত হননি তাদের অনেক উপকার হবে। টিকা নেওয়ার পর আবারও সংক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কাও কমবে।”

মাস্ক ও অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জামের উন্নয়নের পক্ষে অস্টারহোম একাই কথা বলছেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন’য়ের সাবেক কমিশনার স্কট গোটলিব বলেন, “ডেল্টা ধরনের মতো ব্যপক সংক্রমণক্ষম ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে হলে ভালোমানের মাস্ক ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নেই।”

যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশ চ্যানেল ‘সিবিএস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, “আমি মনে করি, কেউ যদি সচেতনভাবে মাস্ক পরেন, তবে সেই মাস্কের মান সম্পর্কেও তার সচেতন হওয়া উচিত। ভালোমানের মাস্ক যদি কারও হাতের নাগালে থাকে তবে তা অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত।”

অস্টারহোম বলেন, “মাস্ক ব্যবহার, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর ইতি টানতে হলে সবাইকে টিকা দেওয়াটাই একমাত্র উপায়। তাই টিকা নেওয়াকে কোনো অবস্থাতেই অবহেলা করবেন না।”