সর্বশেষঃ

খালি হাতে ফিরলেও ভালোবাসা জিতেছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’

আন্তর্জাতিক সীমানায় বাংলাদেশের সিনেমা; এ নিয়ে স্বপ্নের শেষ নেই। চেষ্টারও শেষ নেই। সেই অর্থে এ স্বপ্নে সাফল্য আছে অল্প বিস্তর। সত্যজিৎ রায়ের নায়িকা হয়ে বাংলাদেশের ববিতার বিদেশ জয়। প্রশংসায় ভাসা।

এরপর নানা দেশের নানা রকম উৎসবে গিয়েছে এদেশের সিনেমা। গিয়েছেন তারকারাও৷ তবে বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাশালী কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের সিনেমার অফিসিয়ালি অংশগ্রহণ এই প্রথম। কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে প্রথমবার অফিসিয়ালি নির্বাচিত হয়েছিল বাংলাদেশের আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। গত ৭ জুলাই ‘আ সার্তে রিগা’ বা তরুণ নির্মাতাদের বিভাগে ছবিটি প্রদর্শিত হওয়ার পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছিল ছবিটি।

ধারণা করা হয়েছিল এই ছবিটি পুরস্কার পাবে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি টিম রেহানা মরিম নূরের। খালি হাতেই ফিরতে হলো বাংলাদেশি এই সিনেমা ও তার টিমকে।

১৬ জুলাই ‘আ সার্তে রিগা’য় ৬টি বিভাগে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এতে সেরা পুরস্কার গ্রান্ড প্রাইজ পায় রাশিয়ান নারী নির্মাতা কিরা কোভালেনকো পরিচালিত চলচ্চিত্র আনক্লেনচিং দ্য ফিস্টস। জুরি প্রাইজ পায় গ্রেট ফ্রিডম (সেবাস্টিয়ান মাইজে), এনসেম্বল প্রাইজ পায় বোন মের (হাফসিয়া হেরৎসি), প্রাইজ অব কারেজ পায় লা সিভিল (তিওডোরা আনা মিহাই), প্রাইজ অব অরিজিনালিটি পায় ল্যাম্ব (ভ্লাদিমির জোহানসন), স্পেশাল মেনশন পায় নচে দে ফুয়েগো (তাতিয়ানা উয়েজো)।

‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে পুরস্কার না পেলেও রেহানা মরিয়ম নূর জিতে নিয়েছে সারাবিশ্বের চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের ভালোবাসা। ছবিটি প্রদর্শনীর পর ‘স্ট্যান্ডিং অভেশন’ পেয়েছিলো৷ দেশে দেশে গণমাধ্যমে লেখা হয়েছে বাংলাদেশি সিনেমার প্রশংসা। যা এদেশের সিনেমার জন্য আশির্বাদ বলেই মানছেন দেশীয় চলচ্চিত্রপ্রেমী ও সমালোচকরা৷

এ সাফল্যকে দেখা হচ্ছে এ দেশীয় চলচ্চিত্রের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে৷ আজ পুরস্কার আসেনি। কিন্তু যে পথ তৈরি করে দিয়েছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সে পথে হেঁটেই একদিন অনেক বড় স্বীকৃতি আসবে বাংলাদেশে; এই সবার প্রত্যাশা।

তবে একটি সম্ভাবনা এখনো রয়ে গেছে। আগামীকাল কানের ডিরেক্টরস’ ফোর্টনাইট অনুষ্ঠানেও ছবিটি পুরস্কার পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে জানা গেছে, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ শিগগিরই বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেতে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে ছবিটির সেলস এজেন্ট হিসেবে যুক্ত হয় ফিল্মস বুটিক। তাদের মাধ্যমেই যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিতরণের স্বত্ব পেয়েছে দুই প্রতিষ্ঠান।

আন্তর্জাতিক বিনোদন পত্রিকা ভ্যারাইটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিতরণ স্বত্ব কিনেছে গ্রাসশপার ফিল্ম ও গ্র্যাটিচুড ফিল্মস। ২০২২ সালে শুরুতে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ মুক্তি পাবে। এরপর একে একে দর্শকের সামনে আসবে ডিজিটাল, হোম ভিডিও ও নন-থিয়েট্রিকাল পদ্ধতিতে। সম্প্রতি এ বিষয়ে গ্রাসশপার ফিল্ম ও ফিল্মস বুটিকের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।

বর্তমানে কানে অবস্থান করছেন ছবিটির পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, প্রধান মুখ আজমেরী হক বাঁধনসহ ৮ সদস্যের দল। আগামীকাল ফ্রান্স ত্যাগ করবে বাংলাদেশের এই সিনেমা টিম।