সর্বশেষঃ

চাকরির ভাইভায় যে ভুলগুলো করা যাবে না

চাকরির ভাইভার কথা শুনলেই দুশ্চিন্তা ভর করে। এমন নার্ভাসনেস অস্বাভাবিক নয়। দুশ্চিন্তা থেকে অনেকে ভুল করে ফেলেন। পারা অনেক বিষয়ও উত্তর দিতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু সফল হতে হলে ভাইভা ভীতি দূর করতে হবে।

এমন কিছু ভুল আছে, যা চাকরির ভাইভায় কিছুতেই করা যাবে না—
তাড়াহুড়ো
চাকরির ভাইভার ক্ষেত্রে সময়ের মূল্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে একদম সঠিক সময়ে সব কিছু করতে হবে। ভাইভাতে কোনোভাবেই দেরি করে যাওয়া যাবে না। আবার খুব একটা আগেও গিয়ে অপেক্ষা করা যাবে না। ভাইভা নেওয়ার নির্ধারিত সময়ের পর বা অনেক আগেই সেখানে উপস্থিত হলে চাকরিদাতা মনে করবে আপনার সময়-জ্ঞান নেই। সঠিক সময়ে উপস্থিত হয়ে তাড়াহুড়ো না করে প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে হবে।

আত্মবিশ্বাস
ভাইভায় ডাক পেলে সেখানে যাওয়ার আগে সে প্রতিষ্ঠান, তাদের ধরন ও কাজকর্ম নিয়ে কিছুটা জানাশোনা থাকতে হবে। তবে তাদের সম্পর্কে সব কিছুই জেনে গিয়ে নিজের ভেতরে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস তৈরি করা যাবে না। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে আপনার আত্মবিশ্বাস কারও কাছে দৃষ্টিকটু না মনে হয়।

আপনার আচরণে বা কথায় যেন এমন প্রকাশ না পায় যে, আপনি অন্য প্রার্থীদের ছোট করে দেখছেন। আবার কোনো বিষয় আপনার না জানা থাকলে চালাকি করে বানিয়ে বলার চেষ্টা করা যাবে না। সোজাসুজি বলতে হবে যে, আপনি পারছেন না অথবা এটা বলতে পারেন যে আপনার এ মূহুর্তে মনে পড়ছে না।

বেতন
ভাইভাতে বেতন নিয়ে প্রশ্ন হলেই চাকরিপ্রার্থীরা বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন। তবে সেখানে বেতন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে একটু কৌশলে উত্তর দেওয়া উচিত। চেষ্টা করবেন আগে থেকেই খোঁজ নিতে যে আপনার আবেদন করা পদে বেতনটা কেমন হতে পারে। সে আন্দাজে বলতে পারেন অথবা বলতে পারেন যে আপনি বেতন নিয়ে তেমন ভাবছেন না, কাজ ভালো করে শিখতে চান।

এ ছাড়া আগে কোথাও কাজ করে থাকলে সেখানকার বেতন জানতে চাইলে সেটি বাড়িয়ে বলার চেষ্টা করা উচিত নয়।

ঘড়ি দেখা যাবে না
ভাইভার সময় ঘড়ির দিকে তাকানো ঠিক হবে না। ঘড়ি দেখলে এর মানে দাঁড়ায় যে আপনি চাকরির চেয়েও বড় কোনো তাড়াহুড়োয় আছেন।
এ ছাড়া ভাইভার সময় সেখানে এদিক-সেদিকে চোখ বোলানো ঠিক হবে না। এতে ভাইভা গ্রহীতার মনে হতে পারে আপনি অন্যমনষ্ক।

অপ্রাসঙ্গিক কিছু বলা যাবে না
সেখানে নিজের সম্পর্কে বলতে বললে শুধু নিজের কাজ ও পড়াশোনা নিয়েই বলা উচিত। এর বাইরে টুকটাক নিজের শখের কথা বলতে পারেন। কিন্তু ব্যক্তিগত কোনো তথ্য বা আগের কোথাও কাজ করে থাকলে সেখানকার কিছু শেয়ার করা যাবে না।

নেতিবাচক উত্তর এড়ানো
আপনাকে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হলে সেখানে নেতিবাচক কিছু বলা যাবে না। এমন কোনো কথা বলা যাবে না, যাতে আপনার ব্যক্তিত্ব নিয়ে ভুল ধারণা তৈরি হয়। আবার হাস্যকর কোনো কথা বলাও ঠিক হবে না। মুখে মিষ্টি হাসি রেখে সিরিয়াস হয়ে কথা বলতে হবে।

ধৈর্য রাখা
অনেকসময় আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে একই প্রশ্ন বারবার করা হতে পারে। এটি করা হলে বিরক্ত না হয়ে চেষ্টা করুন একই উত্তর ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে দেওয়ার। এমনটি বলা যাবে না যে একটু আগেই উত্তর দিয়েছেন আপনি।

এ ছাড়া ভাইভার পর সেটির সিদ্ধান্ত নিতে সপ্তাহ বা মাসখানেক সময়ও লাগতে পারে প্রতিষ্ঠানের। এ সময়ে অধৈর্য হওয়া যাবে না। কোনোভাবেই নিয়োগকর্তাদের কাউকে ইমেইল বা ফোন করে ফল জানতে চাইবেন না। এতে করে আপনার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব থাকলেও সেটি পাল্টে যেতে পারে।

ভাইভাতে বেশি নড়াচড়া নয়
সেখানে বসতে বা কিছুতে অস্বস্তি লাগলে সেটি সরাসরি বলতে পারেন। কিন্তু সেটি না করে বেশি নড়াচড়া করবেন না। সোজা হয়ে কথা বলতে হবে। বেশি পা নাড়ানো যাবে না। প্রয়োজনে টুকটাক হাত নাড়াতে পারেন। সেখানে বেশি নড়াচড়া করলে নিয়োগকর্তাদের মনে হতে পারে আপনি অস্থির প্রকৃতির এবং অমনোযোগী।