সর্বশেষঃ

তালাকের পরে মামলা, আসামী খালাস ? আইন কি বলে ?

নারী ও শিশু বা যৌতুক নিরোধ আইনের মামলায় আসামী পক্ষ যখন পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয় বা সমন বা অন্য কোন ভাবে জানিতে পারেন তাহার নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বা যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা হয়েছে তখন প্রায় সময় আসামী পক্ষ বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল বা বিজ্ঞ আদালতে নিবেদন করেন যে তিনি বাদিনীকে তালাক দেওয়ায় তাহার নামে হয়রানী মূলক মামলা দায়ের করেছেন। সেই ক্ষেত্রে আসামী পক্ষ বক্তব্যের সমর্থনে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল বা বিজ্ঞ আদালতে উপযুক্ত প্রমান পেশ করিতে পারিলে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে আসামীকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। যখন মামলাটি বিচারের জন্যে প্রস্তুত হয়ে চার্য গঠনের জন্যে শুনানীর দিন ধার্য করে চার্য গঠন বিষয়ে শুনানী করা হয় তখন আইনের বিষয় সময় বিজ্ঞ বিচারকের নিকট পেশ করে অব্যাহতি চাওয়া হয়। এবং এই ক্ষেত্রে অর্থাৎ তালাকের পরে যদি মামলা দায়ের করা হয় তবে সেই ক্ষেত্রে মামলাটি অচল হবে এবং অব্যাহতি বা খালাস পাবেন। কেননা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই মর্মে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে,
The High Court Division came to a finding that admittedly the date of occurrence was on 05-09-2009 which was subsequently to the date of division and that the instant case was filed on 11-09-2009. Therefore, the High Court Division concluded that the order dated 18-01-2011 passed by the Learned Judge, Nari-O-Shishu Nirjaton Daman Tribunal, Comilla, rejecting the application of the accused for the discharge under section 265(C) of the Code of Criminal Procedure and framing charge against them should be set aside. (Rowshan Ara Begum Vs. Md. Mizanur Rahman and others. 12 ADC, Page-96)
High Court Division found that the incident of assault on the complainant is alleged to have occurred on 06-02-2009, Whereas the accused husband claim to have divorced the complainant on 19-01-2009. High Court Division observed that since the divorce took place earlier, the victim was not supposed to be present in the house of her husband after 19-01-2009.
অভিযোগ করা হয় স্বামী তাকে মারধর করেছে কিন্তু ভিক্টিমকে এর পূর্বেই তালাক দেওয়া হয়েছিল। ……….. (Para-14)
Upon carefully scrutiny of all the evidence and materials on record, the Appellate Division finds that the High Court Division has correctly arrived at the decision to acquittal the accused husband.
স্বাক্ষ্য ও উপাত্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করে আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত দেয় যে অভিযুক্ত স্বামীকে খালাস দেওয়ার হাইকোর্টের আদেশ সঠিক। …………… (Para-16)
(The State Vs. Md. Rofizal Hoque, 6 ALR (AD) Vol-2, Page-90)
এবার যদি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা ২ এর সংজ্ঞা পর্যালোচনা করা হয় তাহলে দেখা যাবে অর্থাৎ সংজ্ঞায় বলা হয়েছে ‘‘যৌতুক’’ অর্থ কোন বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সহিত জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত বিবাহের সময় বা তৎপুর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পন হিসেবে বিবাহের কনে পক্ষের নিকট দাবীকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ। আবার যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮ এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে ‘যৌতুক’’ অর্থ বিবাহের এক পক্ষ কর্তৃক অন্য পক্ষের নিকট বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বশর্ত হিসাবে বিবাহের সময় বা তৎপূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ অব্যাহত রাখিবার শর্তে, বিবাহের পণ বাবদ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, দাবিকৃত বা বিবাহের এক পক্ষ কর্তৃক অপর পক্ষেকে প্রদত্ত বা প্রদানের জন্য সম্মত কোনো অর্থ-সামগ্রী বা অন্য কোনো সম্পদ, তবে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরিয়াহ্) প্রযোজ্য হয় এমন ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে দেনমোহর বা মোহরানা অথবা বিবাহের সময় বিবাহের পক্ষগণের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব বা শুভাকাঙ্ক্ষী কর্তৃক বিবাহের কোনো পক্ষকে প্রদত্ত উপহার-সামগ্রী ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না। অধিকন্তু এই সংজ্ঞার সমর্থনে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এক যুগান্তকারী রায় প্রাদন করেছেন যাহাতে বলা হয়েছে,
It is an condition given to any party of marriage that before or at the time of marriage or after the marriage some property or money should be given to him or her. The word “Bride” and “Bridegroom” as mentioned in section 4 of the said act made it more clear. After marriage nobody can be treated as bride or bridegroom they may be treated as husband and wife. (Para-10)
Accordingly the rule is hereby made absolute. In the result, the proceedings of C.R case No. 1094/2009, Now pending before the court of Metropolitan magistrate, Court no. 18 Dhaka is hereby quashed. (Para-12)
(N.M Shafiqur Rahman Vs. The State, 7ALR, Page- 313)
লেখক
এডভোকেট মোঃ ওমর ফারুক
জজ কোর্ট, চট্রগ্রাম।