সর্বশেষঃ

ফুটবল জাদুকর মেসির জন্মদিন বুধবার

আধুনিক ফুটবল জাদুকরের জন্মদিন বুধবার (২৪ জুন)। ৩৩-এ পা দিলেন ফুটবল কিংবদন্তী লিওনেল মেসি। সকাল থেকে শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন এ তারকা ফুটবলার।

২০০০ সালে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে বার্সার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি চার্লি রেক্সাচের নজরে পড়েন মেসি। বালক মেসির সঙ্গে একটি রেস্টুরেন্টে সেসময় একটি ন্যাপকিন পেপারে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তিনি। এরপর ‘বিস্ময়বালক’ মেসি বার্সার যুব অ্যাকাডেমি ‘লা মেসিয়া’র ঘরে পা রাখেন। ‘গ্রোথ হরমোন ডিসঅর্ডার’ রোগে আক্রান্ত মেসিকে বার্সা সবধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরে যার প্রতিদান সর্বোচ্চ আনুগত্য দিয়ে দিয়েছেন তিনি।

২০০৩ সালের ১৬ নভেম্বর মাত্র ১৭ বছর বয়সে এসপানিওলের বিপক্ষে ম্যাচে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক হয় মেসির। এরপর আলবাসেতের বিপক্ষে কাতালান জায়ান্টদের হয়ে প্রথম গোলের দেখা পান তিনি। ৮৭তম মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল বার্সা।

তৎকালীন কোচ ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ড তারকা খেলোয়াড় স্যামুয়েল ইতোকে তুলে নিয়ে ১৭ বছর বয়সী মেসিকে নামান। মাঠে নামার মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যেই গোল পেয়ে যান তিনি আর সঙ্গে সঙ্গে পুরো ক্যাম্প ন্যু ‘মেসি’, ‘মেসি’ বলে চিৎকার করে উঠে।

৩০ নম্বর জার্সি গায়ে বড় আসরে নামা শুরু করলেও খুব শিগগিরই স্বীয় যোগ্যতাবলে আইকনিক ১০ নম্বর জার্সির মালিকানা পেয়ে যান মেসি। সেই থেকে শুরু তার বিশ্বসেরা হওয়ার দৌড়। লা লিগার ইতিহাসে ৪৪০ গোল করার রেকর্ড তার দখলেই আছে।

২০১২ সালে মেসির আসল রূপ দেখতে পায় বিশ্ব। সেবার তার পারফরম্যান্স তাকে ‘ভিনগ্রহের খেলোয়াড়’ হিসেবে অবস্থান এনে দেয়। মাত্র ৩৫ বছর বয়সী মেসি সেবার জার্ড ম্যুলারকে ছাড়িয়ে দেশ ও ক্লাবের হয়ে এক মৌসুমে ৯১ গোলের বিশ্বরেকর্ড গড়েন। ১৯৭২ সালে দেশ ও বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জার্মান কিংবদন্তির গোলসংখ্যা ছিল ৮৫টি। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ম্যুলারকে ছাড়িয়ে গেলেও থামেননি মেসি। বরং রিয়াল ভায়োদোলিদের বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয়ের রাতে ম্যাজিক্যাল পারফরম্যান্স দিয়ে চমকে দেন।

২০১১-১২ মৌসুমে লা লিগার ১৩টি দলের সম্মিলিত গোলের চেয়েও বেশি গোল করেছিলেন মেসি।

মেসি জাদুতে এখন পর্যন্ত ১০টি লা লিগা, ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ৬টি কোপা দেল রে, ৩টি ক্লাব বিশ্বকাপ এবং ৩টি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ জয় করেছে বার্সেলোনা। শুধুমাত্র নিজ দেশ আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে এখনও শিরোপার দেখা পাননি তিনি।

যদিও ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনাল, ২০১৫ ও ২০১৬ কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতার খুব কাছ থেকে ফিরেছেন। এই তিনবার ফাইনাল হেরে শিরোপা স্বপ্ন ভেঙেছে তার।

২০১৯ সালে ফের একবার মেসি রাজত্ব দেখেছে বিশ্ব। পুরো বছর মাঠে রাজত্ব দেখিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর জিতে নেন তিনি। রেকর্ড গড়ার পথে তিনি পেছনে ফেলেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। এর আগে দু’জনেই সমান ৫টি করে ব্যালন ডি’অরের মালিক ছিলেন।

প্রায় একযুগ ধরে চলা বিশ্বসেরা হওয়ার লড়াইয়ে একজন আরেকজনকে পেছনে ফেলা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এর আগে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ২৬ বছর বয়সের আগেই ৪টি ব্যালন ডি’অর জেতার কীর্তিও আছে মেসির দখলে।