সর্বশেষঃ

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশকে ৪৮ ঘন্টার অল্টিমেটাম দিলো বিএমএ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিলো বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ)। এই সময়ের মধ্যে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এসআই রিয়াজুলকে কোতয়ালী থানা থেকে প্রত্যাহারের না করা হলে মানববন্ধন, প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ করে দেয়াসহ নানান কর্মসূচী হতে নেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এর জরুরী সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসক সংগঠন সাধারণ সম্পদাক প্রফেসর ডাঃ মোঃ মনিরুজ্জামান শাহিন।

তিনি বলেন, জরুরী সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে বিএমপি পুলিশের এসআই রিয়াজুলকে কোতয়ালী থানা থেকে প্রত্যাহার, বিএমএ’র জেলা সভাপতি’র বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানী মুলক মামলা প্রত্যাহার এবং আগামীতে যে কোন চিকিৎসককে এভাবে হয়রানী না করা হয় তার দাবী জানানো হয়। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপরুক্ত দাবী পুরণের জন্য আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবী পুরণ না করা হলে বরিশালের চিকিৎসকরা আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষনা করবে। আন্দোলনের কর্মসূচীর মধ্যে মানববন্ধন, চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রাখা এবং পর্যায় ক্রমে আরো কঠোর কর্মসূচী হাতে নেয়া হতে পারে বলে জানান মানিরুজ্জামান শাহিন।

এ আগে বেলা ১২টা বিএমএ’র সভাপতি ডাঃ মোঃ ইসতিয়াক হোসেন’র সভাপতিত্বে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ কনফারেন্স কক্ষে এ জরুরী সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় কলেজ অধ্যক্ষ ডাঃ এস এম সরওয়ার, সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ রনিজৎ খা, সহ-সভাপতি ও সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ সৈয়দ মাকসুমুল হক, সাধারণ সম্পদাক প্রফেসর ডাঃ মোঃ মনিরুজ্জামান শাহিন, প্রফেসর ডাঃ জহিরুল হক মানিক, ডাঃ হাওয়া আক্তার জাহান, ডাঃ ইমরুল কায়েস, ডাঃ নাজিমুল হক, শেবাচিমের আউটডোর ডক্টরস এসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ সৌরভ সুতার, সাধারণ সম্পাদক নূরুন্নবি তুহিন, বিএমএ’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ভিপি ডাঃ মাসরেফুল ইসলাম সৈকত, অন্তঃবিভাগ চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আসিক দত্ত, ডাঃ সিরিন সাবিহা তন্নি বক্তব্য রাখেন।

চিকিৎসকরা জানান, গত ২২ ডিসেম্বার রাত ৯টার মোবাইল ফোনে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) বরিশালের সভাপতি ডাঃ মোঃ ইসতিয়াক হোসেন’র সাথে বিএমপি পুলিশের এসআই রিয়াজুল অসদাচারন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে। বিষয়টিতে চিকিৎসকরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। তাই ওই এসআইকে কোতয়ালী মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার ও তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশের উধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ইতোপূর্বে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বিএমএ দাবী জানিয়েছিলো। কিন্তু গত কয়েক দিনেও এই দাবী পুরণ হয় নি। এ কারনে আজ মঙ্গলবার বিএমএ জরুরী বৈঠক করে।

বিএমএ’র বরিশালের সহ-সভাপতি ডাঃ সৈয়দ মাকসুমুল হক বলেন, পৃথিবীব্যাপি করোনাকালীন দূর্যোগে বাংলাদেশের চিকিৎসকগন যেখানে নিবেদিতপ্রান ও সফলতার সাথে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছেন। সেখানে এমন ঔদ্ধত্তপূর্ন আচরন ও ক্ষমতার অপব্যবহার বরিশাল বিভাগের চিকিৎসকদের কর্মস্পৃহা ও স্বাস্থ্য সেবা স্থবির করে দেবে।

তিনি বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বার বুধবার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ডাঃ এম.এস রহমান সুমন কর্তৃক মানিক কারিকর নামক রোগীর অপারেশন সম্পন্ন হয়। উক্ত চিকিৎসক ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের নিয়োগকৃত চিকিৎসক নন, কেবলমাত্র কনসালটেন্ট হিসেবে চেম্বার বা অপারেশন করেন। তথাপি অপারেশন পরবর্তী জটিলতা সৃষ্টি হলে এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ ইসতিয়াক হোসেন এর কাছে বিষয়টি রোগী অবহিত করেন। তিনি রোগীর প্রতি মানবিক দিক বিবেচনা করে পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে রোগী কতিপয় ব্যক্তি কর্তৃক প্ররোচিত ও প্রভাবিত হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ওই দিন প্রাথমিক তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে এস আই রিয়াজুল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কোনরূপ অবহিত করেই ২২ ডিসেম্বার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে যান। এ সময় মোবাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও বিএমএ বরিশাল শাখার সম্মানিত সভাপতি ডাঃ মোঃ ইসতিয়াক হোসেন এর সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ন ও অসৌজন্যমূলক আচরন করেন এবং মামলায় ২নং আসামী হিসেবে তাঁকে অন্তর্ভূক্ত করার হুমকি প্রদান করেন। উক্ত রোগীর চিকিৎসায় কোন ধরনের সংশ্লিষ্ট না থাকা সত্তে¡¡ও মামলা গ্রহন করে তাঁকে হয়রানিমূলক ভাবে ২নং আসামী করা হয়। পরবর্তীতে রোগী পুনরায় সংশ্লিষ্ট সার্জারী বিশেষজ্ঞ কর্তৃক আশ্বস্ত হয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে গেলে থানা থেকে গড়িমসি করা হয়।

যার পরিপ্রেক্ষিতে রোগী গত ২৪ ডিসেম্বার এফিডেভিটের মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। সহ-সভাপতি ডাঃ সৈয়দ মাকসুমুল হক আরো বলেন, বরিশালের সর্বজন শ্রদ্ধেয় সিনিয়র চিকিৎসক ও চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বিএমএ, বরিশাল শাখার সম্মানিত সভাপতি ডাঃ মোঃ ইসতিয়াক হোসেন’র প্রতি এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বরিশালের সর্বস্তরের চিকিৎসক সমাজ সংক্ষুব্ধ।