সর্বশেষঃ

ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে আবারো চাঙ্গা বরিশাল আওয়ামী লীগ

আলম রায়হান ও মশিউর রহমান তাসনিমঃ

বরিশাল সদর উপজেলা কমপ্লেক্সে ১৮ আগস্টের রহস্যজনক ঘটনার ধকল কাটিয়ে আবার চাঙ্গা হয়েছে বরিশাল আওয়ামী লীগ। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর দৈনিক দখিনের সময়কে জানান, দুই এক দিনের মধ্যেই জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নতুন উদ্যোমে মাঠে নামবে। সূত্রমতে, ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিনে জমকালো শোডাউনের পরিকল্পনা রয়েছে বরিশাল আওয়ামী লীগের।
এদিকে নির্ভরযোগ্য অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, বরিশাল আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে বেশ কয়েকটি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন দক্ষিণ বঙ্গের সিংহপুরুষ ও রাজনীতির অভিভাবক আবুল হাসানাত অবদুল্লাহ। ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকের পর দ্বিধাদন্দ্ব কাটিয়ে নতুন করে সক্রিয় হয়েছে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। সক্রিয় হয়েছে অঙ্গ সংগঠনগুলোও।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দৈনিক দখিনের সময়-এর আলাপ হয় ১৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল বারের সভাপতির কক্ষে। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু ।
এক প্রশ্নের উত্তরে এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলের ভিতরে-বাইর নানান রকম খেলা হতেই পারে। এ রকম উদাহরণ অনেক আছে। তবে এর প্রভাব খুবই ক্ষণস্থায়ী। এবং এর কোন রাজনৈতিক মূল্য নেই। ফলে এ নিয়ে আমরা মোটেই ভাবছি না। বরং আগামী নির্বাচন ও জনগণের প্রত্যাশার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা অধিকতর সক্রিয় হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমন দিকনির্দেশনাই দিয়েছেন আমাদের অভিভাবক দক্ষিণ বঙ্গের সিংহপুরুষ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। অপর এক প্রসঙ্গে এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম মন্ত্রী-এমপি; কিন্তু রাজনীতিক নন। যদিও মহানগরের সহ-সভাপতি হিসেবে তাঁর একটি পদ আছে। রাজনীতির প্রশ্নে তিনি আমাদের বিবেচ্য নন। রাজনীতিতে তাকে আমরা কোন পক্ষই মনে করি না!
এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে উত্তেরে এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১০ সেপ্টেম্বর এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, বাড়াবাড়ি করবেন না, দলের ভিতর উপদল তৈরি করবেন না। প্রধানমন্ত্রীর এই উচ্চারণে সতর্ক বাণীর পাশাপাশি রাজনৈতিক নির্দেশনা অত্যন্ত স্পষ্ট। এই নির্দেশনা অনুসারেই আমরা অগ্রসর হচ্ছি।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কতিপয় কাউন্সিলর সম্প্রতি বরিশাল সদরের সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব) জাহিদ ফারুক শামীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও ‘ফটোসেশন’ প্রসঙ্গে নগর আওয়ামী লীগের সভপাতি এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, নানান কারণে প্রতিমন্ত্রীর কাছে কাউন্সিলররা যেতেই পারেন। এটি যেমন দোষের কিছু নয়, তেমনই এর কোন রাজনৈতিক মূল্য নেই। এই তৎপরতা রাজনীতিতে কোন ম্যাটার করে না। এনিয়ে আমরা মোটেই ভাবছি না।
ছাত্র রাজনীতি থেকে বেড়ে ওঠা জননেতা এ কে এম জাহাঙ্গীর ছাত্রজীবনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন। আবার দলীয় রাজনীতিতেও তিনি আস্থা ও জনসমর্থন অর্জন করেছন। এ জন্য তাকে অতিক্রম করতে হয়েছে রাজনীতির দীর্ঘ পথ। এই পথ চলায় তিনি নানান বৈরী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এগিয়েছেন। এরপরও বরিশাল সদর উপজেলা কমপ্লেক্সে ১৮ আগস্টের ঘটনা প্রসঙ্গে এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, জিয়া ও এরশাদের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন এবং বিএনপি-জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। কিন্তু ১৮ আগস্টের মতো পরিস্থিতির সম্মুখিন আর হয়েছি বলে মনে পড়ে না!
প্রশাসন প্রসঙ্গে এক পশ্নের উত্তরে এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি এবং সরকারের প্রশাসন- দুইয়েরই প্রধান এবং কান্ডারী হচ্ছেন রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী পুরো বিষয়টিই অবগত আছেন এবং পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরা রাজনীতিকরা রাজনীতির কাজ করবো, প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে। প্রশাসনের কর্মকান্ড ও আচরণ-বক্তব্য নিয়ে আমরা খুব একটা ভাবছি না।