সর্বশেষঃ

রেকর্ড দামে এলএনজি কিনছে বাংলাদেশ

তিন কার্গোতে অতিরিক্ত ব্যয় ২০০০ কোটি টাকা
রেকর্ড দামে এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) কিনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ইতোমধ্যে তিন কার্গোতে অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দাম বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজার (স্পট মার্কেট) থেকে সরাসরি এলএনজি কেনা কয়েক মাস বন্ধ রাখে সরকার। এতে দেশে গ্যাসের সংকট বেড়ে যায়। সরকার গ্যাস রেশনিং করতে বাধ্য হয়। সংকট সামাল দিতে জরুরি ভিত্তিতে তিন কার্গো এলএনজি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এর মধ্যে স্পট মার্কেটে দাম আরও বেড়ে যায়। তিন কার্গোর মধ্যে একটি ইতোমধ্যে দেশে এসে পৌঁছেছে। অন্য দুটি চলতি মাসে আসবে। যে দুটি কার্গো আসছে, তার একটি সরবরাহ করবে ভিটল অন্যটি গানভর। ভিটলের কার্গোর প্রতি এমএমবিটিইউ (পার মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) এলএনজির দাম পড়েছে ৩৫.৮৯ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন হাজার ৭১ টাকা। গানভরের কার্গোর প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়ছে ৩৬.৯৫ ডলার (প্রায় তিন হাজার ১৬২ টাকা)। আর প্রথম কার্গোর প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়েছে ৩২ ডলার (দুই হাজার ৭৩৮ টাকা)। এই তিন কার্গো এলএনজি কিনতে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে পেট্রোবাংলার। গত জানুয়ারিতে কেনা প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল ১০ ডলার। এ হিসাবে নতুন কেনা তিন কার্গোতে বাংলাদেশের অতিরিক্ত হয়েছে ব্যয় দুই হাজার কোটি টাকা।

দেশে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এফএসআরইউ) বছরে ৭ মিলিয়ন টন এলএনজিকে রিগ্যাসিফিকেশন (প্রক্রিয়াকরণ) করতে পারে। সরকার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কাতার ও ওমান থেকে চার মিলিয়ন টন এলএনজি সংগ্রহ করে। বাকি এলএনজি সিঙ্গাপুরের স্পট মার্কেট থেকে আমদানি করে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কাতার ও ওমান থেকে কেনা এলএনজির প্রতি এমএমবিটিইউর দাম পড়ে ১০ মার্কিন ডলার।

জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় চীন, জাপান ও ইউরোপে এলএনজির চাহিদা বেড়েছে। এর চাপ পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। তারা বলছেন, শুধু স্পট মার্কেটের ওপর নির্ভর না করে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি সংগ্রহের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

দেশে বর্তমানে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪২০ কোটি ঘনফুট। গত বৃহস্পতিবার পেট্রোবাংলা সরবরাহ করে ৩১০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে এলএনজি থেকে পাওয়া গেছে ৬৭ কোটি ঘনফুট।