সর্বশেষঃ

লকডাউন শিথিলে সরকারের সমালোচনায় বিএনপি

লকডাউন শিথিলে সরকারের সমালোচনায় বিএনপি
সরকারঘোষিত লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্তে করোনার সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। শুক্রবার সকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের করোনা সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘সরকার পরিকল্পনাবিহীন উদ্যোগের মাধ্যমে, ঈদ উপলক্ষে লকডাউন উঠিয়ে দিলো এবং মানুষকে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলো। এবার কিন্তু করোনার বিস্তার ঢাকা নয় গ্রামে। এই ঈদে সবাই বাড়ি যাবে আবার যখন তারা ঢাকায় ফেরত আসবে তখন সারা দেশে করোনার বিস্তার হবে।’

‘আপনারা জানেন যে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ৭০ শতাংশ বেশি গতিতে ছড়ায়। সুতরাং করোনাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য যে ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করেছে আমাদের দেশে যেন শেষ পর্যন্ত মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত না হয়- এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত।’

মাহমুদ টুকু বলেন, আমাদের দলের স্থায়ী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গ্রামের মানুষরা ওষুধ পাচ্ছে না, তারা অক্সিজেন পাচ্ছে না, জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংখ্যা কম থাকায় মানুষ দুর্ভোগে পড়ছে। ফলে সারা দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা একেবারে হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্যে আছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দলের পক্ষ থেকে জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দেব। আমরা সব জেলায় দলীয় কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন-ড্যাবের সহযোগিতায় করোনা হেলপ সেন্টার খুলেছি। এ পর্যন্ত ৪৫টি জেলায় সেন্টার খুলে ফেলেছি।’

‘আজকে ময়মনসিংহ উত্তর-দক্ষিণ, চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ, ফরিদপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, সুনামগঞ্জ, ঝালকাঠি, নরসিংদী, গোপালগঞ্জে হেলপ সেন্টারের উদ্বোধন করব। সব মিলিয়ে আমাদের ৫৩টা হয়ে যাবে। আশা করি আগামী ঈদের আগেই বাকি জেলাগুলোতে শেষ করতে পারব। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা জনগণের পাশে থাকব।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ১৪ জুলাই বরগুনায় আমরা হেল্প সেন্টার খুলেছিলাম। কিন্তু গতকালকে পুলিশ গিয়ে আমাদের সেই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিয়েছে। বলেছে যে, বিএনপির সাহায্য লাগবে না।’

জেলার হেল্প সেন্টারগুলো থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা, অক্সিজেন বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থাও থাকবে। বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে জনগণ স্বাস্থ্য-চিকিৎসা সেবা, ওষুধ সরবারহসহ বিভিন্ন সেবা পাবেন বলে জানান টুকু।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছিলাম, লকডাউন সফল করতে হলে দরিদ্র, প্রান্তিক, কর্মহীন, দিন আনে দিন খায় মানুষের কাছে কমপক্ষে তিনটা মাস ১৫ হাজার টাকা পৌঁছে দিতে হবে। সেটা সরকার করেনি। তারা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। প্রণোদনাটা কোথায় দেয় আমরা কেউ জানি না। আপনারা যদি বস্তিগুলোতে গিয়ে দেখেন, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন প্রণোদনা টাকা তারা পায় কিনা-আমার মনে হয় যে, আপনারা সঠিক উত্তরটা পেয়ে যাবেন।’

‘সরকারকে বলব, আমরা জনগণকে সহায়তা করার জন্য কাজ করছি। আমাদেরকে দয়া করে এই সহায়তাটা করতে দেন।’ ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনের পর চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ঝালকাঠি, সুনামগঞ্জ, চাঁদপুর, নরসিংদী, গোপালগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ের করোনা হেল্প সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সস্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাখাওয়াত হাসান জীবন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, শ্যামা ওবায়েদ, মোশতাক আহমেদ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমসহ জেলা নেতারা।