সর্বশেষঃ

সাংসদ পাপুল কুয়েতের নাগরিক নন, বলছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

কুয়েতে আটক বাংলাদেশের সাংসদ শহিদ ইসলাম (পাপুল) কুয়েতের নাগরিকত্ব পাননি। তিনি এলিয়েন্স রেসিডেন্ট ল বা বিদেশিদের জন্য আবাসিক আইনের আওতায় সেখানে অবস্থান করেন। কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে শহিদ ইসলামের নাগরিকত্বের বিষয়ে এই কথা জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় বলেছিলেন, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ শহিদ ইসলাম কুয়েতের নাগরিক হলে, তাঁর আসন শূন্য হবে। এরপর কুয়েতের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি আলোচনায় আসে। আর আজ কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই বিবৃতি এল।

কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম নিরাপত্তা বিভাগ বিবৃতিতে বলেছে, কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযুক্ত বাংলাদেশি সাংসদ কুয়েতের নাগরিকত্ব নিয়েছেন বলে যে কথা বলা হচ্ছে তা সত্য নয়। তিনি এলিয়েন্স রেসিডেন্ট ল বা বিদেশিদের জন্য আবাসিক আইনের আওতায় কুয়েতে বসবাস করছেন। বেশ কয়েকটি অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পাবলিক প্রসিকিউশনের দপ্তরে তদন্ত চলছে। বিবৃতিতে গণমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমে কোন কিছু প্রচারের আগে এর সত্যতা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫৯ সালে কুয়েতের তখনকার আমীর ১৭ নম্বর ডিক্রি জারির মাধ্যমে এলিয়েন্স রেসিডেন্ট ল প্রণয়ন করেন। পরে ২০১১ ও ২০১৪ সালে অভিবাসন নীতিমালায় একটি আইনি কাঠামো দেওয়ার লক্ষ্যে এতে সংশোধনী আনেন।

কুয়েতের এলিয়েন্স রেসিডেন্ট ল সম্পর্কে জানতে এই প্রতিবেদক চার বাংলাদেশির সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার কথা বলেছেন। গত তিন দশক ধরে দেশটিতে ব্যবসা ও চাকরি করছেন ওই চারজন।গ্লোবাল টাইম ২৪ডটকম জানান, কুয়েতে চাকরি, পরামর্শক বা ব্যবসা যে কাজের জন্য বিদেশিরা আসেন, তাদের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে রেসিডেন্ট পারমিট দেওয়া হয়। সাধারণত এর মেয়াদ থাকে তিন বছর। পরে তা প্রয়োজন অনুযায়ী নবায়ন করা হয়। তবে ওই পারমিট নবায়নের সময় নির্দিষ্ট ওই নাগরিকের পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ থাকতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা পাসপোর্ট অ্যান্ড ইমিগ্রেশন দপ্তর ওই পারমিটে দিয়ে থাকে। তাই যে পেশারই হোন না কেন, কুয়েতে আসা বিদেশি সব পেশাজীবীর রেসিডেন্ট পারমিট নিতে পারেন। নাগরিকত্ব নয়।

মানব ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে জুনের ৬ তারিখ কুয়েতের মুশরিক এলাকার বাসা থেকে কুয়েতের সিআইডি শহিদ ইসলামকে আটক করে। তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কুয়েতের রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে রেসিডেন্ট পারমিটের ব্যবসার কথাও স্বীকার করেছেন। এর ফলে মানব ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেন আর রেসিডেন্ট পারমিট ব্যবসার অভিযোগে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। কয়েক দফা জামিন বাতিল শেষে তাঁকে ২৫ জুন ২১ দিনের জন্য কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত