দেশের ভিআইপি’রা কেন সরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন না?
দেশের ধনীরা মূলত বেসরকারি হাসপাতালকেই বেছে নিচ্ছেন। এর বাইরে তাদের পছন্দ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)। কিন্তু সেখানে বিশেষ অনুমোদন ছাড়া কেউ সুযোগ পাচ্ছেন না। কারণ এটা সামরিক বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক সদস্যদের জন্য। তবে যারা সুযোগ পাচ্ছেন তারা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছেন।
এক বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে জার্মান সংবাদসংস্থা ডয়েচে ভেলে।
বাংলাদেশে বিত্তবান, প্রভাবশালী, মন্ত্রী এমপি ও পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা আগে থেকেই দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে পছন্দ করতেন। তবে করোনভাইরাসের কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ ও চিকিৎসা না থাকায় আর বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকায় এবার তাদের দেশেই থাকতে হচ্ছে। তবে কোনোভাবেই তারা দেশেই সরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভর করতে পারছেন না।
ভিআইপি’দের জন্য আলাদা করোনা হাসপাতালের প্রস্তাব থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা সমালোচনার মুখে হয়নি। প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে ভিআইপি ব্যবস্থা আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বড় বড় হাসপাতালেও ভিআইপি কেবিন আছে। আর বিভিন্ন পেশাজীবী আর কর্পোরেট গ্রুপ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালের সাথে করোনা চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে রেখেছে। সাধারণ মানুষের আশ্রয় সরকারি হাসপাতালই।
মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য, শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কেউ কেউ এরইমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারাও গেছেন কেউ কেউ৷ তবে তাদের বলতে গেলে কেউই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেননি বা নিচ্ছেন না।
জানা গেছে, ভিআইপি’দের বড় অংশটিই আছেন সিএমএইচে। তাদের মধ্যে এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যও আছেন। আর প্রভাশালীদের কাউকে কাউকে দ্রুত হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলেও সাধারণ মানুষের জন্য এই সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এহতেশামুল হক মনে করেন, ভিআইপি’রা যে সরকারি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা নিচ্ছেন না এটা তাদের ‘মানসিক সমস্যা’।
তার মতে, মন্ত্রী-এমপিরা যার যার এলাকার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলে হাসপাতালগুলোর অবস্থা জানতে পারতেন এবং সেগুলোর উন্নতি করতে পারতেন। কিন্তু তা হয়নি। তারা আসলে জানেনই না যে বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালের অবস্থা কী। তাই তাদের আস্থাও নেই। এখন করোনার চিকিৎসায় দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ না থাকায় তারা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন৷ সুযোগ থাকলে তারা বিদেশে চলে যেতেন। দুই-একজন চার্টার্ড বিমানে গিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন।