সর্বশেষঃ

টিপু হত্যার ঘটনায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্পৃক্ততা

রাজধানীতে আওয়ামী লীগ নেতা টিপু হত্যার ঘটনায় আন্ডারওয়াল্ডের সম্পৃক্ততা পেয়েছে ডিবি। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান, ফ্রিডম মানিক ও বিকাশ-প্রকাশ গ্রুপের নির্দেশে এ কিলিং মিশনে জড়িত ১০ জন আছেন নজরদারিতে। এরই মধ্যে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন আরফান উল্লাহ দামাল। শনাক্ত করা হয়েছে মাসুমের সঙ্গে থাকা সেই মোটরসাইকেল চালককেও।

রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয় ২৪শে মার্চ রাতে। দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে প্রাণ যায় কলেজছাত্রী প্রীতিরও।

সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ২৭শে মার্চ শ্যুটার মাসুম মুহাম্মদ আকাশকে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। মাসুমকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। এতে সামনে আসছে ঘটনার আদ্যোপ্রান্ত।

গোয়েন্দারা বলছেন, মতিঝিল-শাজাহানপুর এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে একজোট হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান, ফ্রিডম মানিক ও বিকাশ-প্রকাশ। পরে হয় টিপু হত্যার পরিকল্পনা কর তারা।

আর যুবলীগ নেতা মিল্কি ও বাবু হত্যা নিয়ে বিরোধে এতে যুক্ত হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুক ও পলাশ। এই হত্যার নেতৃত্বে ছিল বিকাশ-প্রকাশের কর্মী মুসা, ফ্রিডম মানিকের কর্মী দামাল ও মারুফ। আর মারুফের মাধ্যমে যুক্ত হয় মোল্লা শামীম। শামীমের বুন্ধই শ্যুটার মাসুম।

হত্যার নির্দেশ পাওয়ার পর, জানুয়ারি শেষ দিকে কমলাপুরের রুপালী যুব উন্নয়ন সংস্থায় হত্যার ছক কষে মুসা, দামাল, শামীমসহ ৬ জন।

আর হত্যার দায়িত্ব দেয়ার জন্য নির্বাচন করা হয় মাসুমকে। মাসুমের নামে আগেই থাকা হত্যা-মাদকের ৫ মামলা তুলে নিতে আইনজীবীরা চেয়েছিলেন ৬ লাখ টাকা। টিপু হত্যার পরিবর্তে সে টাকা মাসুমকে দিতে রাজি হন মুসা।

গোয়েন্দারা বলছেন, টিপু হত্যায় প্রথমে একটি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে মনে করা হলেও, অস্ত্র ছিল ২টি। এর প্রমাণ মিলেছে ঘটনাস্থলে পাওয়া ১৩টি গুলির খোসা থেকে।

টিপু হত্যার সম্পৃক্ততার অভিযোগে বৃহস্পতিবার অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরফান উল্লাহ দামালকে। ডিবির ধারণা সেখান থাকা বেকআপ টিমের সদস্য গুলি চালিয়ে থাকতে পারে দ্বিতীয় রিভলবার থেকে।

দামালের সেই রুপালী যুব উন্নয়ন সংস্থা এখন বন্ধ। স্থানীয়দের অভিযোগ টিপু হত্যায় সম্পৃক্ততা আছে তার। এদিকে টিপু হত্যায় নাম আসা শীর্ষ সন্ত্রাসী ফ্রিডম মানিকের ক্যাশিয়ার মারুফ খান ব্যাংকিং এজেন্ট। তার দোকানটি ৩-৪ দিন ধরে বন্ধ।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে আন্ডারওয়াল্ডের সম্পৃক্ততা পেয়েছে ডিবি। তবে টিপুর স্ত্রীর দাবি, ওই চক্রের সঙ্গে তার স্বামীর যোগাযোগ ছিলো না।

এদিকে মাসুমের সঙ্গে এই কিলিং মিশনে অংশ নেয়া সেই মোটরসাইকেল চালক ছিলেন মোল্লা শামীম, সে সম্পর্কেও নিশ্চিত হয়েছে ডিবি।

এর আগে গত ২৪ মার্চ, বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুর এলাকায় মাইক্রোবাসে করে যাওয়ার সময় জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এসময় গুলিবিদ্ধ হন পাশের রিকশাযাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি। এ ঘটনায় আহত হন টিপুর গালিচালক মুন্না।