সর্বশেষঃ

এবার চীনের টার্গেট দেপসাং ভ্যালি, ঠেকানোর ক্ষমতা নেই ভারতের

ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন গালওয়ান ভ্যালি, প্যাংগং লেকের পর এবার দেপসাং ভ্যালি টার্গেট করেছে চীন। দেশটির সামরিক শক্তি দিয়ে ভারতের ওই এলাকাটি নিয়ন্ত্রণে নেয়া চেষ্টা করছে, এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে ভারতীয় সাবেক সেনা কর্মকর্তারা।

কারণ দেপসাং-এ ইতিমধ্যেই সেনার সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেছে চীন। সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় সেনার সঙ্গে ট্যাঙ্ক, কামানও মোতায়েন করতে শুরু করেছে। ওই এলাকায় দ্রুত সেনা মোতায়েনের জন্য রাস্তাও তৈরি করছে চীন।

আর ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা বলছে, চীনের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার উপায় নেই, এখন তাদের ওখানেই আটকাতে হবে। গালওয়ান, প্যাংগং বা দেপসাং, কোথাও এগোতে দেয়া যাবে না। চীন কথা বোঝে না। সমানে সমানে শক্তি হলে তবেই গুরুত্ব দেয়। সেটাই করতে হবে।

সোমবার (২২ জুন) জম্মু-কাশ্মীরে সেনার ১৬ কোরের প্রাক্তন কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল রামেশ্বর রায় বলেন, এতো দিন চীনের পক্ষে দেপসাং ভ্যালিতে ঘাঁটি ঘেড়ে বসে থাকা মুশকিল ছিল।

কারণ পাহাড়ের উপরে বেগ ওল্ডি বিমানঘাঁটি থেকে ভারত ওই এলাকায় কর্তৃত্ব করে। কিন্তু এখন চীনের সেনা দেপসাং ভ্যালির দক্ষিণে গালওয়ান ভ্যালিতে পাহাড়ের মাথায় চলে এসেছে।

ও দিকে প্যাংগং লেকের মধ্যে ঢুকে আসা ফিঙ্গার ফোর নামক পাহাড়ের মাথাতেও চীনের সেনা ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। এর পরে চীন দেপসাং-এও সামরিক শক্তি বাড়াতে শুরু করবে। বাস্তবে এর অর্থ হল, দেপসাং ভ্যালি থেকে একেবারে নীচে ডেমচক পর্যন্ত কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা চীনের রয়েছে।

দেপসাং ভ্যালিতে চীনের সেনা ২০১৩-র এপ্রিলে প্রায় তিন সপ্তাহ ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল। আগস্ট মাসেই দেপসাং-এর উপরে কর্তৃত্ব করতে বিশ্বের সর্বোচ্চ বিমানঘাঁটি দৌলত বেগ ওল্ডি চালু করে দেয় ভারত।

এ বার গালওয়ান বা প্যাংগং থেকে চীনের সেনাকে সরানো সহজ হবে না বলেই মনে করছেন প্রাক্তন সেনা-কর্তারা। রামেশ্বর বলেন, অনেকে বলছে, চীনের সেনা শীতে সরে যাবে। সরে যাওয়ার মনোবাঞ্ছা থাকলে কংক্রিটের বাঙ্কার তৈরি করত না।

আমাদের জওয়ানেরা শীতের সময় ওই ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকতে পারলে, ওরা পারবে না কেন? অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলেন, আমি যদি মনে করি, আমাদের পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার উপায় নেই, তা হলে ওদের অন্তত ওখানেই আটকাতে হবে।

গোটা এলাকার ভৌগোলিক খুঁটিনাটির সঙ্গে পরিচিত রামেশ্বরের বক্তব্য, চিনের সেনা প্যাংগং-এর পাহাড়ের মাথায় অন্তত ৬০টি কংক্রিটের বাঙ্কার তৈরি করে ফেলেছে। পাহাড়ের নীচে ভারতের ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)-র চৌকি থাকলেও

পাহাড়ের উপরে চীন ঘাঁটি গেড়ে ফেলায় ভারতের সেনা বা আইটিবিপি ফিঙ্গার-এইটের দিকে ভারতের এলাকাতেই যেতে পারছে না।
রামেশ্বর বলেন, আমাদের পক্ষে গালওয়ানে ১৪ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্ট ও প্যাংগং হ্রদের ফিঙ্গার-ফোরের অন্য দিকে নিজের এলাকাতেই আর এগোনো মুশকিল।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *