সর্বশেষঃ

জেরুজালেমে খেলতে যাচ্ছেন না মেসিরা

নিরপরাধ গাজাবাসির ওপর ইসরায়েলি হানাদারদের নির্মম হামলা এবং হত্যাকাণ্ডের তুমুল প্রতিবাদ হয়েছে সারা বিশ্বে। ফিলিস্তিনে অবৈধ বসতি নির্মাণ, ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ এবং একের পর এক হত্যাকাণ্ডের কারণে ইসরায়েলকে ঘৃণাও করে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ। আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ বিরতি বলবৎ থাকলেও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কবে আবার ফিলিস্তিনের ওপর ম্যাসাকার শুরু করা হয়, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

ইসরায়েলিদের এমন অমানবিক কারণে তাদেরকে বয়কট করারও ঘোষণা দিয়েছেন অনেকে। এবার ইসরায়েলকে অনানুষ্ঠানিকভাবে বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছে লিওনেল মেসিদের ক্লাব বার্সেলোনা। জেরুজালেমে স্বাগতিক ইসরায়েলের শীর্ষ লিগের ফুটবল ক্লাব বেইতার জেরুজালেম-এর বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল মেসির ক্লাব বার্সার।

কিন্তু বার্সেলোনা আপাতত সেই প্রীতি ম্যাচটি বাতিল করে দিয়েছে। পূর্ব জেরুজালেমে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ১৯৬৭ সালে আরবদের সঙ্গে যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখলে করে নিয়েছিল ইসরায়েল। যদিও ইসরায়েলিরা পুরো জেরুজালেমকেই তাদের নিজেদের বলে দাবি করে এবং তাদের বসতি স্থাপন এখনও পর্যন্ত বন্ধ করছে না।

অন্যদিকে ফিলিস্তিন পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের বলে দাবি করছে এবং ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে। এমন পরিস্থিতিতে জেরুজালেম নিয়ে দুটি দেশের রাজনৈতিক সমস্যা, সংঘর্ষের মধ্যে সেখানে বার্সেলোনা খেলতে যাবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে।

ফলে বাধ্য হয়েই ম্যাচটি বাতিল করা হয়েছে। ম্যাচটি জেরুজালেমের টেডি স্টেডিয়ামে ৪ অগস্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ওই প্রীতি ম্যাচে হওয়ার কথা শুনে বার্সেলোনা ফুটবল দলকে বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছিল ফিলিস্তিনিরা।

বেইতার জেরুজালেম ক্লাবের মালিক মোসি হগেগ বলেন, ‘আমি বাধ্য হয়েছি ম্যাচটি বাতিল করতে। কারণ, এটা ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চাওয়া।’ হগেগের মতে, বার্সেলোনা সম্পূর্ণ অনৈতিক একটি চাওয়া আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।’

জেরুজালেমের মেয়র মোসি লায়ন হগের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, ‘জেরুজালেম হচ্ছে ইসরায়েলের রাজধানী। এমন একটি শহরকে বয়কট করাটা মোটেও সমীচিন নয়।’

বার্সার জেরুজালেমে না খেলার বিষয়টি অবশ্য বিস্মিত করেছে বেইতারের মালিককে। তার করা ফেসবুক পোস্টের শেষ দিকে হগেগ লিখেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে গর্বিত যে আমি একজন ইহুদি, গর্বিত যে আমি একজন ইজরায়েলি।’

তবে বার্সেলোনার কাছ থেকে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বস্তব্য দেয়নি। বেইতার জেরুজালেম এমন একটি ক্লাব, যেখানে কখনোই আরব মুসলিম খেলোয়াড়দের নেয়া হয় না। এটা দিয়েই ক্লাবটি বুঝিয়ে দেয়, তারা কতটা বর্ণবাদী। ২০১৮ সালে বেইতার ক্লাবটি কিনে নিয়ে মোসি হগেগ সেই ঐতিহ্যই ধরে রেখেছেন।