সর্বশেষঃ

ত্রিমুখী টার্গেটে পুড়ে গেল ফিলিস্তিনিদের স্বপ্ন

মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশটির মানুষ সব হারিয়ে শুধুমাত্র স্বাধীনতা শব্দটি আপন করে নেয়ার জন্যেই বেঁচে আছে তার নাম ফিলিস্তিন। এখন ত্রিমুখী টার্গেটে পরিণত হয়ে নিজেদের সব হারানোর পথে ফিলিস্তিনি জনগণ। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র তো আগে থেকেই ছিল, এখন আরব দেশগুলো তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করেছে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের ফের বিজয়, মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রভাব বিস্তার ও ইহুদিদের চিরদিনের চাওয়া ফিলিস্তিনি ভূমির দখল- এ তিন নজরে কপাল পুড়ছে ফিলিস্তিনের।
নানা বিতর্ক সত্ত্বেও আরেকবার প্রেসিডেন্ট হতে উঠেপড়ে লেগেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যে কোন মূল্যে জয় নিশ্চিত করতে ইহুদি ভোটের দিকে নজর দিচ্ছেন তিনি। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে আরও প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে মার্কিন অস্ত্র চায় সংযুক্ত আরব আমিরাত। আর ইসরাইলের চিরদিনের চাওয়া ফিলিস্তিনি ভূমির দখল।

আর তিন পক্ষের এই তিন স্বার্থের বলি হচ্ছে ফিলিস্তিন। কপাল পুড়ছে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের। গত নির্বাচনের মতো ইহুদিদের ভোট নিশ্চিতে এবারও সেই ইসরাইল তোষণকেই কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরই আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করেন তিনি। শুধু তাই নয়, মার্কিন দূতাবাসও সরিয়ে এনেছেন। ফিলিস্তিন-ইসরাইলের দ্বিরাষ্ট্র সমাধানকে অস্বীকার করে ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামে বিতর্কিত একটি প্রস্তাবও প্রণয়ন করেছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিরা সংখ্যায় কম হলেও অর্থবিত্ত, জ্ঞান-বিজ্ঞানে তারাই এগিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রধান প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রায় ৭০ শতাংশের মালিক ইহুদিরা। মার্কিন অর্থনীতিও ইহুদিদের নিয়ন্ত্রণে।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে (বৃহস্পতিবার) তারই মধ্যস্থতায় উপসাগরীয় অঞ্চলের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিনের বেশির ভাগ এলাকায় দখলে নিয়েছে ইসরাইল। এবার পশ্চিম তীরের অবশিষ্ট এলাকাও নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পাঁয়তারা শুরু করেছেন ইসরাইলি রাজনীতিকরা। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার নামে ইসরাইলের এই অবৈধ দখলদারিত্বেরও স্বীকৃতি দিচ্ছে আমিরাত।
ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ফিলিস্তিন ও মুসলিম বিশ্বের আহ্বান তুচ্ছ করে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে গত সপ্তাহে চুক্তি স্বাক্ষর করেন আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদ। ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’র নেপথ্যেও তার হাত রয়েছে। সৌদি আরবের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব হিসেবে মোহাম্মদ বিন সালমানকে বেছে নিয়েছেন তিনিই। তার নজর মূলত পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণের দিকে।
এজন্য সৌদির সঙ্গে যৌথভাবে একটি ‘মুসলিম বাহিনী’ গড়ে তুলতে চান তিনি। আর এর জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও গোলা বারুদ কিনতে চান যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ইসরাইলের হাত ধরে সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।