সর্বশেষঃ

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরানের মামলা

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করলো ইরান। তেহরানের অভিযোগ, ওয়াশিংটনের অবৈধ অবরোধের কারণে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আর মার্কিন অবরোধকে অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে ইরানি শীর্ষ নৌ কমান্ডার হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ইরানের উপকূল জুড়ে রয়েছে বহু ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র শহর, যা শত্রুদের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো।
করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর আবারো সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন শুরু করে ইরান। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বেশ কিছু মহড়া এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় মধ্যপ্রাচ্যের পরাশক্তি এই দেশটি। এরইমধ্যে ইরানের অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভ্যুলেশনরি গার্ডের নৌ ইউনিটের প্রধান, রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী রেজা তাংসিরি জানান, দেশটির উপকূল জুড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র শহর। নাম উল্লেখ না করলেও যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে এই কমান্ডার হুঁশিয়ার করে বলেন, শত্রুকে দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়ার জন্যই এগুলো তৈরি করা হয়েছে।
নৌ ইউনিট প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী রেজা তাংসিরি বলেন, পারস্য উপসাগর এবং মোরকান উপকূলজুড়ে আমাদের সক্ষমতার কথা শত্রুরা ভালো করেই জানে। তবে এমন সব স্থানে আমাদের উপস্থিতি রয়েছে, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। উপকূলে আমাদের যেসব ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র শহর রয়েছে, তা শত্রুদের জন্য দু:স্বপ্ন হয়ে দেখা দেবে।
কয়েক দশক ধরেই একের পর এক মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় কাবু ইরান। জর্জরিত দেশটির অর্থনীতি। ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরের পর অবরোধ কিছুটা শিথিল করে তৎকালীন ওবামা প্রশাসন। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর সেই চুক্তি বাতিল করে ইরানের বিরুদ্ধে আবারো কঠোর অবরোধ আরোপ করেন। এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে সাধারণ ইরানিদের দৈনন্দিন জীবনে। নিষেধাজ্ঞার কারণে করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খায় দেশটি।
তবে সেই পরিস্থিতি সামলে উঠে এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা দায়ের করেলো ইরান। তাদের অভিযোগ, ওয়াশিংটনের অবৈধ অবরোধের কারণেই করোনাভাইরাসের মহামারী মোকাবিলা মারাত্মক বাধার মুখে পড়ে। একইসঙ্গে বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত মার্কিন অবরোধ প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানায় ইরান।
মামলা দায়েরের পরই ইরানি পার্লামেন্ট মজলিসে দেওয়া বক্তব্যে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ, নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডকে অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ হিসেবে আখ্যা দেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞারও তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
জাভেদ জারিফ বলেন, আমি মনে করিনা যে, যুক্তরাষ্ট্র একটি সুপারপাওয়ার। আসলে তাদের ওপর পরমাণু চুক্তি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই তারা তা স্বাক্ষরে বাধ্য হয়েছিল। আবার তারা চুক্তি থেকে বেরিয়েও গেছে। তবে ভবিষ্যত এবং ইতিহাস, ওই চুক্তির দলিল ইরানের পক্ষেই কথা বলবে।
যুক্তরাষ্ট্র করোনাকে ইস্যুতে চীনকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে বলে দাবি করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।