সর্বশেষঃ

রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় মুক্ত আসলাম ফকির আবার হত্যা মামলায় গ্রেফতার

রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০১৫ সালে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আসলাম ফকিরের ফাঁসির সাজা মওকুফ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। আর ২০১৭ সালে তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে ফিরে আসেন বিপুল বিক্রমে। মুক্ত হওয়ার তিন বছর পর আবারও আরেকটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি হলেন আসলাম ফকির।

রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় সাহেব চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড হতে মওকুফ পাওয়া সেই আসলাম ফকিরকে (৫০) হত্যা মামলায় গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

রোববার সকাল ৬টার দিকে যশোরের চৌগাছা কলেজ পাড়ার পাশে একটি ভাড়া বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৮, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল। এরপর তাকে ফরিদপুর ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। আসলাম ফকির ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের পিতার নাম মৃত শুকুর ফকিরের ছেলে।

র‌্যাব-৮ সিপিসি-২, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক দেবাশীষ কর্মকার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামি হিসেবে আসলাম ফকিরকে যশোরের চৌগাছা থানার কলেজ পাড়া এলাকা হতে রোববার সকালে গ্রেফতার করা হয়। তাকে ভাঙ্গা থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি বলেন, ভাঙ্গা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে শহীদ শেখ (৪৮) নামে এক ব্যক্তি খুনের অভিযোগে গত ২২ এপ্রিল আসলাম ফকিরের বিরুদ্ধে আবারও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় ভাঙ্গা থানায়। ওই মামলার পর হতেই সে পলাতক ছিলো। গত ২২ এপ্রিলের পর হতে কমপক্ষে পাঁচবার সে স্থান বদল করে। মে মাসের মাঝামাঝি সময় হতে সে নিজেকে একজন প্রবাসী পরিচয় দিয়ে চৌগাছার কলেজ পাড়ার ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠে।

তিনি আরও জানান, আসলাম ফকির অবৈধ ভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালাতে চেয়েছিলো। তার আগেই র‌্যাব সদস্যরা তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০০৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গার মানিকদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম সাহেদ আলী ওরফে সাহেব মিয়া হত্যা মামলায় আসলাম ফকিরসহ অপর দুই আসামি তারা মৃধা ও ইমারত আলীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আসামিদের
আপিলে হাইকোর্টে এ রায় বহাল রাখা হয়।

২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর আসলাম ফকিরের ফাঁসি কার্যকরের দিন ধার্য হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও সিভিল সার্জনসহ সকলকে চিঠি দিয়ে প্রস্তুতও থাকতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ফাঁসির একদিন আগে অস্বাভাবিক আচরণের কারণে তার ফাঁসি স্থগিত হয়ে যায়। ওইদিনই দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন তিনি। এরপর সাধারণ ক্ষমায় তার ফাঁসি মওকুফ করে ১৪ বছরের সাজা দেয়া হয়। কারাগারে সদাচরণের কারণে সাজা কমিয়ে ১৩ বছর ২দিন কারাভোগের পর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট গাজীপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পান আসলাম ফকির।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি নিজ এলাকায় এসে আবার রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হন। এরপর আবার তার হুকুমে আরও একটি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয় বলে মামলায় অভিযোগ
করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *