সর্বশেষঃ

শাহজালাল বিমানবন্দরে রফতানি পণ্যের কার্টন থেকে কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদিগামী রেডিমেট গার্মেন্টসের রফতানি পণ্য চালানের ৩টি কার্টন থেকে ৩৮ হাজার ৯০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলোর বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ১৬ লাখ টাকা। বিমান বন্দরের কাস্টমস এবং এভিয়েশন সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষ সোয়টারের তিনটি কার্টন থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার ঢাকা কাস্টম হাউজের ডেপুটি কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) মোহাম্মদ মারুফুর রহমান জানান, বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আপারিজ ইন্টান্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পোশাক রপ্তানি করা হচ্ছিল। এসএস ইয়াম অ্যান্ড সমি নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে ৪৩৯টি কার্টনে এসব পোশাক পাঠাচ্ছিল। গোপন তথ্যে শুক্রবার সকালে অভিযান চালিয়ে ৪৩৯টি কার্টনের তিনটি থেকে সোয়েটারের পকেটে ইয়াবার প্যাকেটগুলো উদ্ধার করে ঢাকা কাস্টম হাউসের প্রিভেন্টিভ টিম ও সিভিল অ্যাভিয়েশন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর এগুলো বিমানবন্দরের গুদামে আসে। পরে এভিয়েশন সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষের এসব রপ্তানি পণ্যের ব্যাপারে সন্দেহ হলে কাস্টমসের সহায়তায় কার্টনগুলোতে তল্লাশী চালানো হয়। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে তিনটি কার্টন থেকে ইয়াবাগুলো বের করা হয়।

কাস্টমস হাউস জানায়, বিল অব এক্সপোর্ট অনুযায়ী পণ্য চালানের রফতানিকারক এম এস সিয়াম অ্যান্ড সমি এন্টারপ্রাইজ। ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে খিলগাঁও পশ্চিমপাড়া। আর আমদানিকারক হিসেবে লেখা রয়েছে সৌদি আরবের অ্যাপারিজ ইন্টারন্যাশনাল ইস্ট। যেখানে ঠিকানা দেয়া হয়েছে রিয়াদের আল ওয়াজির ট্রেডিং সেন্টার। ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় কাস্টমস ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হবে।

ডিএনসি সূত্র জানায়, বিশেষ কায়দায় তৈরি পোশাকের ভেতরে লুকায়িত অবস্থায় বিমানবন্দরের স্ক্যানিং মেশিনের মাধ্যমে চালানটি ধরা পরে। পরে সিভিল এভিয়েশন, কাস্টমস মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ তল্লাশিতে ইয়াবার চালানটি জব্দ করা হয়। এরপর অধিদপ্তরের সহকারী রাসায়নিক পরীক্ষক স্পট টেস্টিংয়ের মাধ্যমে অ্যামফিটামিন ইয়াবার উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার তদন্তসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সূত্রটি আরও জানায়, উদ্ধার ইয়াবার চালানটির গন্তব্য ছিল সৌদি আরবের জেদ্দায়। পোশাক রপ্তানির আড়ালে একটি চক্র ইয়াবার চালানটি সৌদি আরবে পাচারের চেষ্টা চালায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফিরোজ ও আবু শামীম নামের দুই জনকে আটক করা হয়েছে। তারা ইমো ট্রান্স কার্গো নামক একটি প্রতিষ্ঠানে লোডারের কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানের কাজের চাপ না থাকায় ট্রানসিট গ্লোবাল কার্গো লজিস্টিক নামক একটি প্রতিষ্ঠানের অনুরোধে মালামাল লোড করছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে ৯ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। সংস্থার ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের (উত্তর) মুকুল জ্যেতি চাকমার নেতৃত্বে চালানো এ অভিযানে মো. ফারুক হোসেন নামের এক জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএনসির গুলশান সার্কেল। এ ঘটনায় রামপুরা থানায় মামলা হয়েছে।

আটককৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারি পরিচালক মো. মেহেদী হাসান জানান, ফারুকের মূল মালিক কক্সবাজারে থাকেন। তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট সংগ্রহ করে বিশেষ কায়দায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতেন।