সর্বশেষঃ

শুভ জন্মদিন মারজুক রাসেল

গ্লোবাল ডেস্কঃ
আমার এক বন্ধু ছবিয়ালে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করত একটা সময়।ছবিয়ালের সব সহকারী পরিচালক আর মারজুক রাসেল একই ফ্ল্যাটে থাকত।ওকে আমি প্রায়ই দেখা হলে মারজুক ভাই এর কথা জিজ্ঞেস করতাম।উনার জীবনযাপন,ভাবনা সবকিছুই আমার কাছে উনাকে আলাদা করেছে শুরু থেকেই।

উনার ব্যাপারে একটা কথা বলি যেটা আমাকে খুব অবাক করেছে,তা হলো মারজুক রাসেল অভিনয় এর পাশাপাশি কিন্তু মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছে অনেকদিন।কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন নাটক সিনেমা বানাতে দেখিনি তাকে!! প্রচুর বই পড়া,শেখা একজন মানুষ কেন এখনো অভিনেতা পরিচয়ে ঘুরে বেড়ান,এ ব্যাপারে আমার এখনো জানার আগ্রহ…

ওহহ ব্যান্ড মিউজিক গ্রুপ যেহেতু,আমাকে তো গান নিয়ে লিখতেই হবে।

মারজুক রাসেল এ পর্যন্ত আসতে অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছেন।

বাবা ছিলেন পাটকলের ৩য় শ্রেনীর কর্মচারী। জন্ম গোপালগঞ্জে হলেও মারজুকরা থাকতেন দৌলতপুরে নির্ধারিত কোয়ার্টারে।৮ম শ্রেনী পড়াকালীন ‘জনবার্তা’ পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা ছাপা হয়।তখন মারজুক একজন মাদ্রাসার ছাত্র।

১৯৯৩ সালে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে খুলনা থেকে ঢাকা আসেন মারজুক।কবি শামসুর রাহমানের বাড়িতে যান। ডোরবেল বাজাতে কবি নিজেই দরজা খোলেন। মারজুক তাকে বলেন, ‘আমি অনাহারী’। এই শব্দ দুটি কবির একটি বইয়ের শিরোনাম। টুঙ্গীপাড়ায় কেবল দু-একবার দেখা হওয়া তরুণটিকে কবি হয়ত ভালো করে চিনতেও পারেননি। কিন্তু তার মুখে নিজের বইয়ের নাম শুনে এবং তরুণের সত্যিকার অনাহারী চেহারা দেখে কবি শামসুর রাহমান মারজুককে ভেতরে নিয়ে যান। মারজুকের জন্য তিনি খাবার টেবিলে সাজান অনেক রকমের খাবার।

মারজুক বেঁচে থাকার জন্য সিনেমার টিকিট বিক্রি করেছেন, ফুটপাথে হকারগিরি করেছেন। তখন তিনি থাকতেন তোপখানা রোডের একটি গাড়ির গ্যারেজে।

এর মধ্যে একটি কনস্ট্রাকশন হাউজে কাজ পেয়ে যান তিনি। এরপরই যাওয়া শুরু করেন আজিজ মার্কেটে। পরিচিত হতে থাকেন নবীন-তরুণ লেখদের সঙ্গে। সে সময় কবিতা, গল্প লেখার পাশাপাশি শুরু করেন গান লেখা। গানের সংখ্যা যখন অনেক হলো তখন সেগুলো নিয়ে সে সময়ের বিখ্যাত সুরকারদের সঙ্গে দেখা করেন।কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছিল না।সবাই শুধু আশ্বাসই দিয়েছে, এর বেশি কিছুনা।

এরমাঝে ফারুক মামুন এর সাথে সাক্ষাত হয় তার।তিনি মারজুককে সংবাদমাধ্যমে চাকরির সুযোগ করে দেন।মারজুক পত্রপত্রিকায় লিখা শুরু করেন।এরইমধ্যে সঞ্জীব চৌধুরীর সাথে সাক্ষাতএর সুযোগ মেলে এবনহ তিনি মারজুকের লেখা পড়ে জেমস এর সাথে দেখা করার জন্য।

জেমস এর তখন ‘লেইস ফিতা লেইস’ অ্যালবামের কাজ চলছিল।তিনি মারজুকের লেখা পড়ে তাঁর সাথে সার্বক্ষণিক রাখেন এবং মারজুক জেমস এর জন্য বেশকিছু গানও লিখেন যার মধ্যে মীরা বাঈ, পত্র দিও, শরাবে শরাব, হা ডু ডু, আমি ভাসব যে জলে তোমায় ভাসাবো সেই জলে উল্লেখযোগ্য।

এরপর সিনেমা,বিজ্ঞাপন,সোলো শিল্পীদের জন্য প্রচুর গান লিখেছেন,এখনো লিখছেন।

এ পর্যন্ত পাঁচটি বই বেরিয়েছে তার।প্রথম প্রকাশিত হয় ‘শান্টিং ছাড়া সংযোগ নিষিদ্ধ’, এরপর আসে ‘চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো’, তৃতীয় বইটি হলো, ‘বাঈজি বাড়ি রোড’, চতুর্থ বইটি হলো ‘ছোট্ট কোথায় টেনিস বল’ এবং পঞ্চম বইটি হলো ‘দেহবন্টন বিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর ‘

মারজুক রাসেলকে জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

গ্লোবাল টাইম ২৪.কম।