সর্বশেষঃ

সংসদে হইচই, ‘ওয়াকআউট’ বিএনপির এমপি হারুনের

জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্বপালনকারী ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার বিরুদ্ধে নিজের বক্তব্যে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ওয়াক আউট করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ।

মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদকে ২০২০-২১ অর্থ-বছরের বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনা জন্য ১২ মিনিট সময় দেয়া হয়। হারুন সংসদে ‘মুজিব কোট’ পরে সংসদে আসেন।

বক্তব্যে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কঠোর সমালোচনা করেন হারুন-অর-রশীদ। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, করোনা দু-তিন বছরেও যাবে না। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ডিজি। তাহলে এই করোনা আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। এটাকে মোকাবিলা করার জন্য জাতীয় ঐক্য দরকার।’

তিনি তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিকলাঙ্গ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এটা পরিবর্তন করা দরকার। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দেন। সরিয়ে দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপযুক্ত ব্যক্তিদের বসান। কমিটমেন্ট লোকদের বসান।

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে হারুনুর রশিদ চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা না করে মানুষ বাঁচানোর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রস্তাব করেন। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলার অভিযোগ’ তুলে তা প্রত্যাহারের দাবি করেন।

সংসদে তারেক জিয়ার প্রসঙ্গ ওঠায় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা প্রায় সবাই তার প্রতিবাদ করেন। সংসদে হইচই করেন।

এরই মধ্যে হারুনুর রশিদের নির্ধারিত ১২ মিনিট শেষ হয়ে যায়। তবে তিনি না বসে বক্তব্য অব্যাহত রাখেন এবং সময় বাড়িয়ে দেয়ার জন্য ডেপুটি স্পিকারের কাছে আবেদন করেন।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী এ সময় তার সময় বাড়িয়ে দেননি। এর প্রতিবাদ করে হারুনুর রশিদ সংসদ কক্ষ ত্যাগ করতে চাইলে ডেপুটি স্পিকার তাকে অনুরোধ করে বসতে বলেন এবং তার কথা শুনতে অনুরোধ করেন।

এ পর্যায়ে হারুন চেয়ারে বসলে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, আপনি জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন এটি সুন্দর প্রস্তাব। কিন্তু আপনি এমন দুজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন যাদের কথা আমি সংসদের এই চেয়ারে বসে উচ্চারণ করতে চাই না। একটি নির্বাচিত সরকার কোন কনভিক্টেড ব্যক্তির সঙ্গে ঐক্য করতে পারে না।

এসময় ডেপুটি স্পিকার বিএনপির এই এমপি ‘কিছু অসংসদীয় কথা’ তার বক্তব্যে বলেছেন উল্লেখ করে সংসদে কার্যবাহ থেকে তা বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেন।

পরে ফজলে রাব্বী সংসদ নেতা শেখ হাসিনার পরামর্শে বিএনপির হারুনকে বাজেটের উপর আরও এক মিনিট বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেন।

এসময় হারুন ফ্লোর নিয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। স্পিকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আপনি সময় বাড়িয়ে দেননি। মাননীয় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলার পর আপনি এক মিনিট সময় বাড়িয়েছেন। আমি আর বক্তব্য দিব না। আপনি আমার বক্তব্যে ইন্টারাপ্ট করেছেন। এর প্রতিবাদে আমি সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছি। এর সঙ্গে সঙ্গেই হারুন কক্ষ ত্যাগ করেন।

বিএনপির সংসদ সদস্য ওয়াকআউট করে চলে যাওয়ার পরপরই কেউ কেউ ফ্লোর চাইলে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, উনার (হারুনের) প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য আমি নিজেই যথেষ্ট। সংসদে কোন সদস্য অসংসদীয় বক্তব্য দিলে আমি অবশ্যই তা ইন্টারাপ্ট করবো। এটা সরকারি দলের কেউ দিলেও করবো, বিরোধী দলের কেউ দিলেও করব।