সর্বশেষঃ

ইরানের জাহাজ প্রায় পৌঁছে গেছে; মার্কিন হুমকির জবাবে ভেনিজুয়েলার ক্ষেপণান্ত্র মহড়া

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পাশাপাশি ভেনিজুয়েলার বৈধ প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকার ও দেশটির জনগণের বিরুদ্ধেও কঠোর ও অমানবিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কারাকাস ও তেহরানের মধ্যে বাণিজ্য কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় এবং সম্প্রতি ইরানের তেল ট্যাংকার ভেনিজুয়েলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ায় মার্কিন কর্মকর্তারা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে হয়েছেন। দেশটির কোনো কোনো কর্মকর্তা ইরান ও ভেনিজুয়েলাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তাদের এ হুমকির জবাবে ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনী নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের জন্য উর্চিলা দ্বীপে ইরানি তেলবাহী জাহাজকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষায় রয়েছে এবং একইসঙ্গে তারা ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া চালিয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, ইরানি তেলবাহী জাহাজ আগমনকে কেন্দ্র করে মার্কিন হুমকি ও সম্ভাব্য হামলা মোকাবেলায় তার দেশের সেনাবাহিনী নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া চালিয়েছে।

দীর্ঘ দিন ধরে ইরান ও ভেনিজুয়েলা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করে আসছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরান ও কারাকাসের কিছু পদক্ষেপে চিন্তিত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট উব্রায়ান এক টুইটার বার্তায় নিকোলাস মাদুরোর সরকারের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, মাদুরোর বেআইনি ও দুর্নিতিগ্রস্ত সরকারই ইরানের কাছ থেকে জ্বালানি তেল আমদানির পদক্ষেপ নিয়েছে।

ইরানের তেল ট্যাংকার ভেনিজুয়েলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পরপরই ওই জাহাজের গতিরোধের জন্য মার্কিন সরকার ক্যারিবিয়ান সাগরে নৌবাহিনী প্রেরণ করেছে। ওয়াশিংটেনর কোনো কোনো কর্মকর্তা হুমকি দিয়েছেন, ভেনিজুয়েলায় ইরানের তেল রপ্তানি ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্ত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান ও ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর যে কৌশল আমেরিকা নিয়েছে তা আন্তর্জাতিক সমুদ্র ও অবাধ বাণিজ্য আইনের লঙ্ঘন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যন্থেনিও গুতেরেসের কাছে লেখা চিঠিতে মার্কিন হুমকি ও উস্কাানিমূলক পদক্ষেপকে জলদস্যুতা হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, আমেরিকার এ আচরণ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য বড় হুমকি। এদিকে, ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনী মহড়া চালানোর পাশাপাশি দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ইরানি জাহাজ ভেনিজুয়েলার পানি সীমায় পৌঁছার সাথে সাথে তাদেরকে আমাদেরকে যুদ্ধ জাহাজগুলো নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেবে।

ভেনিজুয়েলা বহু বছর ধরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করে আসছে। এতো চাপের মধ্যেও তারা মার্কিন বিরোধী দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে নিজেদের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে তারা চীন, রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলায় মার্কিন কর্মকর্তারা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।

যদিও ওয়াশিংটন বহুদিন ধরে ভেনিজুয়েলা সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা সফল হয়নি। সম্প্রতি ইরানের তেল ট্যাংকার আগমনকে কেন্দ্র করে মার্কিন হুমকির জবাবে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা থেকে বোঝা যায় কারাকাস ওয়াশিংটনের হুমকিকে তোয়াক্কা করে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *