সর্বশেষঃ

জিয়াউর রহমান বেগম জিয়াকে ঘরে নিতে চাননি : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার পর বেগম জিয়াকে ঘরে নিতে চাননি। কারণ তার আরেকটি ঘটনা আছে সেটা আমি জানি। ওই সময় জিয়াউর রহমান ছিলেন কুমিল্লায়। তখন তাকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এবং উপ-সেনাপ্রধান করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তাকে উপ-সেনাপ্রধান করেন।

তিনি বলেন, ওই সময় তাকে প্রমোশন দিয়ে মেজর থেকে মেজর জেনারেল করেন বঙ্গবন্ধু। সেই জিয়াই ষড়যন্ত্র করে মোশতাক, কর্নেল রশিদ ফারুককে নিয়ে। মোশতাক যখন অবৈধভাবে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে জিয়াউর রহমানকে করেন সেনাপ্রধান। সেই মোশতাককে হটিয়ে জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেন। জিয়া ছিলেন একদিকে সেনাপ্রধান আরেক দিকে দেশের রাষ্ট্রপতি। এর আগে আইয়ুব খান এই একই দৃষ্টান্ত দেখিয়েছিলেন।

শনিবার (৩ জুলাই) সংসদের ১৩তম ও বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি- বাংলাদেশ না পাকিস্তান, হ্যাঁ। এইতো বিএনপি? এই হলো তাদের রাজনীতি। এই হলো তাদের গণতন্ত্র।’

দলটির কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এমন একটি দল যে দল সৃষ্টি করেছে একজন সামরিক জান্তা। চেয়েছিল সেনাপ্রধান। তিনি সেনাপ্রধান কখন হয়েছে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার যে পরিকল্পনা হয় তার মূল শক্তি ছিল এই জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, খুনি কর্নেল রশিদ এবং ফারুক বিবিসিকে দেয়া তাদের ইন্টারভিউতে এটি স্পষ্ট রয়েছে। জিয়াউর রহমান তাদের সঙ্গে না থাকলে কোনো দিনও এ ষড়যন্ত্র করতে পারত না। কারণ জিয়াউর রহমান ছিলেন উপ-সেনাপ্রধান।

বিএনপি গঠনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে আবার রাজনীতিবিদ হন। উর্দু পড়ে ক্ষমতায় এসে পরে রাজনীতিতে নাম লেখান। সেখান থেকে পরে রাজনৈতিক দল গঠন করে। সেই দলই হলো বিএনপি।

তিনি বলেন, প্রতি রাতে কারফিউ, ১৯৮১ সালে যখন বাংলাদেশে আসি তখনও কারফিউ। ’৭৫ থেকে ’৮১ সাল পর্যন্ত কারফিউ দিয়েছিল বিএনপি। জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন কারফিউ গণতন্ত্র। অনেকগুলো দল গঠনের সুযোগ দিয়েছেন এটা ঠিক। কিন্তু সেখানে গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ ছিল না। নির্বাচনের ফলাফল আগে থেকেই নির্দিষ্ট থাকত। ’৭৮ সালে হ্যাঁ না ভোট, ’৭৯ সালে নির্বাচন সবই ছিল খেলা।

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে দেয়া বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য বলেছেন কুরআন শরিফে নাকি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা নেই। আমি বলব অবশ্যই আছে। আমাদের নবী করিম (সা.) বলেছেন, অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল হতে। তিনি এই শিক্ষা দিয়েছেন। আমাদের কুরআন শরিফে বলা হয়েছে ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সব ধর্মের মর্যাদা দেয়। কোরআন শরিফে আছে লাকুম দিনুকুম ওয়ালিয়াদিন অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে।

জবাবে আরও বলেন, যার যার মতামত সে প্রকাশ করবে। এটা প্রকৃতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষতাই আসে। যতই তিনি অস্বীকার করুন, যেভাবে তিনি ব্যাখ্যা দেন। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। যুগ যুগ ধরে এটা চলছে। হ্যাঁ অবশ্যই নিজের ধর্ম পালনে সবসময় গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল থাকতে হবে। এটা আমাদের শিক্ষা। এটা নবী করিম (সা.) সব সময় বলে গেছেন। কাজেই এ ধরনের কথা সংসদে না বলাই ভালো।