সর্বশেষঃ

“ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা”

~~স্থাবর সম্পত্তি দখল (possession) এবং বেদখল (Dispossession) এর কারণে ১৪৫ ধারার মামলা দায়ের করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। দখল ও বেদখলকে কেন্দ্র করে আবার শান্তি শৃংখলার অবনতি ঘটে৷ রক্তারক্তি,খুন,জখমের কারন উদ্ভব হয়। দখল রোধ, রক্তারক্তি, হানাহানি দূর কারণার্থে তাই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারা মামলা দায়ের করা হয়। বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ পর থেকে ১৪৫ ধারার মামলা দায়ের ও বিচারের (Institute and Trail) এর এখতিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর উপর অর্পণ করা হয়েছে।

১৪৫ ধারার মামলা দায়ের এর উপাদান:

ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারার মামলা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট আদালত‌ে দায়ের করা হয়। কিন্তু ইহা ফৌজদারি মামলা ও প্রতিকার নয়। ১৪৫ ধারার মামলা মূলত Civil Nature এবং Civil প্রতিকার এই প্রতিকার ক্ষণস্থায়ী এবং সাময়িক সময়ের মাত্র।

নিম্নোল্লিখিত কারনগুলো বিদ্যমান থাকলেই কেবল ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারার মামলা দায়ের করা যায়-

(১)অবৈধভাবে বেদখল (Wrongfully dispossessed) হওয়ার ২ মাস এর মধ্যে মামলা দায়ের করা।

(২) বেদখল হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান।

(৩) শান্তি-শৃংখলার অবনতির আশংকা।

(৪) মারামারি ,ঝগড়া-বিবাদ রক্তারক্তির আশংকা বিদ্যমান থাকা।

(৫) নিরংকুশ মালিকানা স্বত্ব বিদ্যমান থাকা।

মামলা দায়ের করা থেকে মামলার জয়লাভ করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ|

কোন মামলা দায়ের করলেই প্রতিকার আশা করা যায় না। মামলা দায়ের করে হেরে গেলে শত্রুতা বেড়ে যায় এবং সম্পত্তির স্বত্ব খর্ব হয়।

মামলা দায়ের করার পূর্বে তাই ভালোভাবে ভেবে এবং কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ১৪৫ ধারার মামলা দায়ের করতে হয়।

যে সকল কারনে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারার মামলার প্রতিকার পাওয়া যায় না:

(১) দীর্ঘ সময় বেদখল থাকার পর।

(২) বেদখল ও শান্তিশৃংখলা বিঘ্নের সম্ভাবনা না থাকলে।

(৩) সম্পত্তির যৌথ মালিকানা থাকলে।

(৪)সম্পত্তি দখলে না থাকলে ।

তবে মনে রাখা উচিত যে দীর্ঘদিন বেদখলে থাকলে এবং সম্পত্তি দখলে না থাকলে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারার মামলা করা যায় না। সেক্ষেত্রে Declaration suit ক‌রে Tittle প্রতিষ্ঠিত করতে হয়।

একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি সহজে বুঝানো যায়। ধরুন, ক একটি পুকুরের মালিক। তার প্রতিবেশী লোকজন জোরপূর্বক পুকুরে মাছ ধরতে আসে। ক বাধা দিলে তারা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চলে যায়। তারা জনবলে বলিয়ান। যে কোন মুহুর্তে তারা জোরপূর্বক পুকুরের মাছ ধরতে পারে। মি. ক বাধা দিলে রক্তারক্তি হবে। আইনী ভাবে তাদের প্রতিহত করার জন্য ক তড়িৎ প্রতিকারের জন্য একটি কার্যবিধি ১৪৫ ধারার মামলা দায়ের করবেন।

লেখকঃ এডভোকেট কাইয়ুম খান রিপন
আইন উপদেষ্টা গ্লোবাল নিউজ ২৪.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *